একটি বিমান তার ডানায়, পেটে বা বিমানের পেছনের দিকে অথবা কার্গো বিভাগে জ্বালানী সঞ্চয় করতে পারে। সমস্থ সঞ্চিত জ্বালানীর প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ জ্বালানী বিমান তার দুই ডানায় বহন করে থাকে। যখন বিমানে জ্বালানী ভরা হয় তখন প্রথমে তা বিমানের ডানাগুলিতে পূর্ণ করা হয়। তারপরেও যদি আরও জ্বালানীর দরকার হয়, তখন তা বিমানের মধ্যে থাকা কেন্দের ট্যঙ্কে তা পূর্ণ করা হয়।
তবে বেশিরভাগ বিমানে এ ধরণের জ্বালানী ব্যবস্থার মূল কারণ কী?
এর পেছনের মূল এবং একমাত্র কারণ ‘উইং বেন্ডিং রিলিফ’ সরবরাহ করা। এটা জানতে গেলে আমাদের প্রথমে জানতে হবে আকাশে ওড়ার সময় ডানা গুলির মুল কাজ কি? আকাশে ওড়ার সময়, ডানা গুলির নিচে তৈরি হওয়া প্রচুর শক্তি তাদের উপরের দিকে বাঁকিয়ে তোলে। বিশেষত ডানাগুলির শেষ প্রান্তে।
এর অর্থ এই নয় যে ডানাগুলি এত চাপের ফলে ওপরে উঠে ভেঙ্গে যাবে। ডানাগুলি যথেষ্ট নমনীয় এবং তা গঠনগত ভার বহন করতে সক্ষম। বিশেষত ডানাগুলি অভ্যন্তরীণ যাত্রীদের কোনও রকম সমস্যা না সৃষ্টি করেই মহাকর্ষীয় বল, টার্বুলেন্স বা বাঁক ঘোরার সময় যে চাপের সৃষ্টি হয় তা সহজেই সহ্য করতে সক্ষম। আর এটি ‘উইং ফ্লেক্স’ নামে পরিচিত।
তবে এই ধরনের নমনীয়তারও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তারা এই মহাকর্ষীয় বল সহ্য করার সময় ডানা শিকড়গুলিতে চাপ দেয়।
সেই কারণে, ডানাগুলিতে জ্বালানী সঞ্চয় করা হয়। ডানাগুলিতে যখন প্রচুর পরিমাণে জ্বালানী বোঝাই করা হয়, তখন ডানা বাঁকানোর মুহুর্তে এই জ্বালানী ডানাগুলিকে কিছুটা স্বস্তি দেয়। বডি ট্যাঙ্কগুলিতে বেশি জ্বালানি না সঞ্চয় করার কারণটি হল, বিমানের কাঠামো যতটা সম্ভব হালকা রাখা। যেহেতু ডানাগুলি জ্বালানী সঞ্চয়ের কারনে ভারী হয় এবং বিমানের কাঠামো হালকা হওয়ায় এটি ডানার শিকড়গুলির উপর চাপ কমাতে সাহায্য করে।
তবে দ্বিতীয় কারণ টি হল, এই পদ্ধুতিতে ডানাগুলির অতিরিক্ত স্থানও ব্যবহার করা যায়।
এয়ারবাস A380 এর মতো কিছু বিমান রয়েছে, যা কেবল ডানা এবং বিমানের লেজের দিকে জ্বালানী ধারণ করে। বিমানের মূল শরীরে কোনও ট্যাঙ্ক নেই। এটি প্রতিটি ডানায় ১২০ টন (১৫০,০০০ লিটার) জ্বালানী এবং বিমানের পিছনে ১৮ টন (২২,৫০০ লিটার) জ্বালানী ধারণ করে। অতএব মোট জ্বালানী ক্ষমতা ২৫৮ টন (৩২২,৫০০ লিটার) হয়ে আসে।