আপনি কি একটি রামধনুর শেষে পৌঁছতে পারবেন?

রামধনু বা রংধনু সমপর্কে আমরা প্রায় সবাই অবগত। বৃষ্টির পর যখন রোদ ওঠে, আকাশে যেদিকে সূর্য আছে তার বিপরীত আকাশে তাকালে অনেক সময় আমরা সাতটি রঙের বিশেষ সজ্জা দেখতে পাই। সেটিই রামধনু বা রংধনু নামে পরিচিত। কিন্তু কখন কি ভেবে দেখেছেন যে, সত্যিই কি একটি রামধনুর শেষ প্রান্তে পৌঁছানো সম্ভব?

কেন আপনি একটি রংধনুর শেষ প্রান্তে পৌঁছতে পারবেন না?

আসলে রামধনু কোন পদার্থ নয়, এটা এক প্রকারের অপটিকাল ইলিউশন মাত্র। একটি রামধনু তৈরি হয় কারণ বৃষ্টির ছোট ছোট ফোটা প্রিজমের মতো কাজ করে। যখন আপনি সেই দিকে তাকান অর্থাৎ যেদিকে সূর্য আছে ঠিক তার উল্টো দিকে, তখন এই বৃষ্টির ফোটার মধ্যে সুর্য্যের রশ্মি পড়ে তা আপনার দিকে প্রতিফলিত হয়।

বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো বিভিন্ন কোণে প্রতিবিম্বিত হয়, সুতরাং সূর্যের সাদা আলো যখন সেই বৃষ্টির ছোট ছোট ফোটার মধ্যে পড়ে, তখন আপনি তা বিভিন্ন রঙের অর্ধ গোলাকৃতির ধনুকের মত দেখতে পান।

সুতরাং, আপনি যত সেই রামধনুর দিকে এগিয়ে যান, তত আপনার ভিউইং আঙ্গেল ও পরিবর্তিত হয়। একটি রামধনু সর্বদা আপনার থেকে একই দূরত্বে থাকবে। আপনি যেমন রামধনুর দিকে এগিয়ে যাবেন, ঠিক সমান দুরত্বে থাকা বৃষ্টির ছোট ছোট ফোটা গুলির ওপর সূর্যের সাদা আলো পড়বে, আবার রামধনুর সৃষ্টি হবে, এবং এটি সর্বদা আপনার থেকে একই দূরত্বে থাকবে, সুতরাং আপনি কখনই রামধনুর পৌঁছাতে পারবেন না। একটি রামধনু স্থির থাকার জন্য,  সূর্য,  বৃষ্টির ফোঁটা এবং পর্যবেক্ষকের মধ্যে কোণটি ৪২ ডিগ্রি হতে হবে।

আপনি যদি রামধনু পেরিয়ে যেতে না পারেন,  তবে লোকেরা কীভাবে বিমান থেকে ফটো তোলেন?

এখন, যেমনটি আমি উপরে উল্লেখ করেছি, আপনি কখনই রামধনু পেরিয়ে যেতে পারবেন না। তবুও, লোকেরা বিমানের মধ্যে থেকে রামধনুর ফটো তুলেছেন। এটি কি করে সম্ভব?

এটি অন্য অপটিক্যাল ইলিউশন। বিমানের জানালাতে বায়ারফ্রিনজেন্স ক্ষমতা আছে। বাইরেফ্রিনজেন্স হ’ল আলোকের অপটিকাল প্রোপার্টি। যখন আলো কোনও উপাদানের মাধ্যমে দেখা হয়, তখন তা দুটো রশ্মিতে বিভক্ত হয়, এবং উভয় রশ্মির বর্ণও আলাদাভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

যখন বিমানের জানালা দিয়ে আলো আপনার চোখে এসে পড়ে, আলোকরশ্মি দুটি একে অপরের সাথে মিশে গিয়ে একটি আলোক মণ্ডলীর সৃষ্টি হয়, যা দেখতে ঠিক রামধনুর মত।

সংক্ষিপ্তসার হিসাবে, আপনি রংধনু পেরিয়ে যেতে পারবেন না এবং আপনি কখনই এর শেষ প্রান্তে পৌঁছাতে পারবেন না।

Leave a Comment