“এই যে দাদারা শুয়োরের বাচ্চারা , কুত্তার বাচ্চারা যদি কামড়ায় তবে এই অব্যর্থ মলমটি কিনে নিয়ে যান , কাটা জায়গায় লাগিয়ে দিন আর দেখুন কেমন আরাম পান … ” বাসে, ট্রেনে , পথে , ঘাটে , হাটে , বাজারে এমন অম্ল-মধুরবাণীর সাথে আমরা হয়তো অনেকেই কম-বেশী পরিচিত । আসলে বাংলাই বলুন বা হিন্দি ” শুয়োরের বাচ্চা ” অথবা ” শুয়ার কি আউলাদ ” মনের ঝাল মনের সুখে মেটাতে শুয়োরের নাম স্মরণ করা মনুষ্য সমাজের একটি পুরোনো রীতি । আসলে শুয়োরের উপর এত কেন রাগ তার উত্তর লুকিয়ে আছে একদম আদিম বন্য জীবন থেকেই । মানুষ যে সময় থেকে আগুনের ব্যবহার শিখল ও মাথায় এলো যে মাংস পুড়িয়ে খেলে বেশ সুস্বাদু ই লাগে সেই সময় থেকেই শুয়োর ছিল তার অত্যন্ত প্রিয় শিকার । তবে কালক্রমে মানুষ সিভিলাইজড হয়েছে এবং বুঝতে পেরেছে যে আল্টিমেট বল্লম উঁচিয়ে পশু শিকার করা গেলেও বাস্তব জীবনে সবাইকে চাইলেই ওরকম গরম দেখানো যায় না । সে আপনার অফিসের বস হোক কি পাওনাদার , সহধর্মিনী অথবা পাড়ার হাত কাটা দিলীপ … জীবন আসলে শুধু ঘোঁৎ ঘোঁৎ করে যাওয়া আর নোংরা ঘেঁটে কাদা গিলে যাওয়ার নাম ।
তবে শুধু যে গালি গালাজ করতেই আমরা শুয়োর কে বেছে নিয়েছি এমন নয় , আরেকটু শিক্ষিত হবার পর আমরা তাকে মর্যাদা দিয়েছি ” পিগি- ব্যাংকস ” হিসেবে । একটা মিষ্টি গোলাপি শুকরকে বেছে নিয়েছি আমাদের সবেধন নীলমণি ‘ পয়সা জমানোর কৌটো ‘ হিসেবে । এতে বাচ্চাদের মনেও শুয়োরের প্রতি ছোট থেকেই একটু মায়া-মমতা জন্মাতে পারে । যদিও চারপাশে যে সব নিত্য নতুন খিস্তি খেউর তাদের কানে আসে তাতে শুয়োরের প্রতি এই শ্রদ্ধা কতদিন থাকে তা বলা কঠিন ।
এ হেন শুয়োরের মতো ‘ ডাউন টু আর্থ ‘ প্রাণী এই যুগে কিন্তু আর একটিও খুঁজে পাওয়া দুষ্কর । আসলে একজন শুয়োর কখনই নয়ন মেলে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারে না । এর জন্য দায়ী আসলে তাদের ঘাড় এর পেশী ও মেরুদন্ড । যা তাদের গলা উঁচু করে আকাশ দেখতে বাধা দেয় । এমনকি একটি গাছের মগডাল দেখতে হলেও তাকে কয়েক পা পিছিয়ে আসতে হয় । তাই যাকে যতই ভয় পান , এভাবে ঘাড় গুঁজে থাকবেন না , মাঝে মাঝে একটু মেরুদন্ডটা সোজা করুন । নাহলে হয়তো অভিযোজন এর ফলে আপনিও মানে ইয়ে … । ” কেয়া পতা কাল হো না “