২০০৪ সালে, ভারত সরকার ঘোষণা করেছিল যে সব ভাষা, ভাষার প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করে, সেই ভাষাগুলিকে ভারতের একটি “ধ্রুপদী ভাষা” হিসাবে মর্যাদা দেওয়া যেতে পারে। পরবর্তী কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি ভাষাকে শাস্ত্রীয় মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমাদের বাংলা ভাষা “ধ্রুপদী ভাষা” হিসেবে মর্যাদা পায় নি। তবে বাংলা এবং মারাঠি সহ অন্যান্য ভাষাকে “ধ্রুপদী ভাষা” হিসেবে মর্যাদা দেওয়ার দাবি উঠেছে।
কেন বাঙলা ভাষা ধ্রুপদী ভাষার তালিকায় নেই?
বর্তমানে ভারতে “ধ্রুপদী ভাষা” হিসাবে চিহ্নিত ৬ টি ভাষা রয়েছে।
১) সংস্কৃত
২) তামিল
৩) মালায়ালাম
৪) কান্নাডা
৫) তেলেগু
৬) ওড়িয়া (বা ওড়িয়া)
বাঙলা ভাষা এই তালিকায় না থাকার কারণ হ’ল, আবগ্রাহাট থেকে বাঙলা ভাষা বিকশিত হয়েছিল যা এটি মগধী প্রাকৃত থেকে উদ্ভূত অপভ্রংশ থেকে সৃষ্ট। আধুনিক বাংলা শব্দভান্ডারে মাগধী প্রাকৃত এবং পালি ভাষার শব্দভাণ্ডার রয়েছে। এছাড়াও সংস্কৃত, পারস্য, আরবি, অস্ট্রোএসিয়িক ভাষা থেকে শব্দভাণ্ডার গৃহীত হয়েছে।
কোনও ভাষাকে ‘ধ্রুপদী’ হিসাবে ঘোষণার জন্য নির্দেশিকা গুলি কি?
২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যসভায় সংস্কৃতি মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, কোনও ভাষাকে ‘ধ্রুপদী’ হিসাবে ঘোষণার জন্য নির্দেশিকা হ’ল:
১) কোন ভাষার প্রাচীনত্ব যদি ১৫০০-২০০০০ বছরের পুরনো হয়।
২) সেই সময়কালের কোন নথিতে যদি সেই ভাষার হদিস পাওয়া যায় বা সেই নথি যদি এখনকার সমাজে মূল্যবান ঐতিহ্য হিসাবে বিবেচিত হয়।
৩) মূল সাহিত্য যেন সম্পুর্ন নিজের এবং অন্য কোন ভাষা থেকে ধার করা না হয়।
৪) আধুনিক ভাষা থেকে ধ্রুপদী ভাষা ও সাহিত্য পৃথক হতে হবে।
বাঙলা ভাষা উপরের সমস্ত ক্রাইটেরিয়া পূরণ করে না। তবুও বাংলা বিশ্বের ষষ্ঠতম সর্বাধিক কথ্য ভাষা হিসেবে ধরা হয়। বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা তে বেশিরভাগ মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলেন। এই সমস্থ জায়াগা ছাড়াও, মহারাষ্ট্র ও গুজরাতেও বিপুল সংখ্যক বাঙলা-ভাষী লোক রয়েছে, যেখানে তারা গহনা শিল্পে কারিগর হিসাবে কাজ করেন।