আপনার হাতের বা পায়ের আঙ্গুল জলে ভিজিয়ে রাখলে কুঁচকে যায় কেন?

আপনি কখনও লক্ষ করেছেন, যদি আপনার হাত বা পায়ের আঙ্গুল কিছুক্ষণ জলে থাকার পর তা কেমন যেন কুঁচকে যায়? মানুষের হাতের এবং পায়ের আঙ্গুলের ত্বকটি সাধারনত চকচকে হয়ে থাকে। যার অর্থ এটি মসৃণ এবং চুলহীন। যখন এটি দীর্ঘক্ষন ধরে জলের সংস্পর্শে থাকে, তখন আঙ্গুলের ওপরের ত্বকটি কুঁচকে যায় কিছুক্ষনের জন্য। বেশিরভাগ লোক দীর্ঘক্ষন ধরে স্নান, সাঁতার কাটা বা বাসন ধোয়ার পরে এই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন। যদিও ঠান্ডা জলের চেয়ে গরম জলে এটি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

কিন্তু আঙ্গুলের ত্বক কুঁচকে যাওয়ার কারণ কী?

অনেকে বলেন যে এটি দীর্ঘ সময় জলে থাকার কারণে আমাদের ত্বক ফুলে যায়। আমারও তাই মনে হয়েছিল যে এটি কেবল হয়ত আর্দ্রতার প্রভাব মাত্র। তবে, আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন কেন এই ঘটনাটি কেবল মাত্র হাতের এবং পায়ের আঙ্গুলগুলিতেই ঘটে কেন? কেন এটি আমাদের দেহের অন্যান্য অংশে হয় না?

একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ভেজা হাতের এবং পায়ের আঙ্গুলের কুঁচকে যাওয়ার কারণ সম্বন্ধে গবেষণা করা হয়েছিল। গবেষণায় দেখা গেছে যে যদি পায়ের ও হাতের আঙ্গুলের স্নায়ুগুলি কেটে ফেলা হয় তবে এই কুঁচকে যাওয়ার ঘটনাটিও অদৃশ্য হয়ে যাবে, যা প্রমাণ করে যে এটি ভেজাজনিত কারণে হয় না, এটি শুধুমাত্র আঙ্গুলের স্নায়ুগুলির জন্য ঘটে থাকে। মানবদেহের স্নায়ুতন্ত্র আঙ্গুলে উপস্থিত রক্তনালীগুলিকে সংকীর্ণ হওয়ার জন্য বার্তা পাঠায়। আর এই রক্তনালীগুলির সংকোচনের ফলে আঙুলের ওপরের ত্বকে ভাঁজের সৃষ্টি হয়।

তবে বিজ্ঞানীদের কাছে এখনও সম্পুর্নভাবে স্পষ্ট নয়, যে কেন ঠান্ডা বা গরম জলের সংস্পর্শে আসার পরে আঙ্গুল কুঁচকে যায়।

২০১৩ সালে একটি ছোট্ট সমীক্ষায় বলা হয়েছিল যে কুঁচকে যাওয়া আঙুল দিয়ে জলে কোন বস্তু ধরে রাখা আরও সহজ। যার অর্থ এই ঘটনাটি একটি বিবর্তনীয় পরিবর্তন হতে পারে যা মানুষকে ভিজে অবস্থার সাথে মানিয়ে নিতে সহায়তা করে।

তাহলে কেন আমাদের মস্তিষ্ক কেবল হাতের এবং পায়ের আঙুলগুলিকে কুঁচকে যেতে বার্তা পাঠায়?

সমীক্ষায় একটি এফ ওয়ান রেসিং কারের টায়ার সাদৃশ্য তৈরি করা হয়েছে।

মসৃণ টায়ার শুকনো পরিস্থিতিতে একটি দুর্দান্ত গ্রিপ সরবরাহ করে। বিপরীতে, রিঙ্কেল টায়ার ভিজে জমিতে আরও ভাল গ্রিপ দেয়। রিঙ্কেলগুলি একটি নিকাশী ব্যবস্থা তৈরি করে যা টায়ারের উপরিভাগের জলকে সরিয়ে ফেলে এবং এর ফলে আরও দৃরতার সাথে মাটি আঁকড়ে থাকতে পারে।

সত্যই আমাদের দেহটি এখনও পুরো মানব জাতির কাছে একটি বড় রহস্য …

Comments are closed.